যারা কম্পিউটার পাগল, বলতে গেলে সারাদিন কম্পিউটার চালু রাখেন, তারা বিভিন্ন কাজে অল্প সময়ের জন্য বাইরে গেলে কম্পিউটারকে স্লিপ মোডে বা ঘুম পাড়িয়ে রেখে যান। যারা ডেস্কটপ ব্যবহারকারী এবং ইউপিএস নেই, কম্পিউটারকে স্লিপ মোডে রেখে গেলে তাদের মাঝে মাঝে ঝামেলা পোহাতে হয়। বাংলাদেশে ইলেক্ট্রিসিটি যাওয়ার একটু বেশীই প্রবণতা থাকার কারণে অনেক সময় অনেকে অনেক ডাটা হারিয়ে থাকেন। তবে যারা কম্পিউটার নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করেন তারা কম্পিউটারকে হাইবারনেট করে যান। হাইবারনেটের(Hibernate) আভিধানিক অর্থ শীতনিদ্রা। এর কাজ ও তেমনই..
হাইবারনেট কি?
স্লিপ মোডে কম্পিউটার বন্ধ হয় না, খুব লো পাওয়ার স্টেটে কম্পিউটার চালু থাকে যার র্যাম সক্রিয় থাকে আপনার ডাটাগুলো স্লিপ মোডের আগের মতো করে রাখতে। কিন্তু হাইবারনেট মোডে কম্পিউটার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, তবে আপনার কম্পিউটারের যেমন ছিলো তেমনই থাকবে; মানে স্লিপ মোডই, তবে একটু অ্যাডভান্স্ড। স্লিপ মোডে আপনার কাজগুলো র্যামে সেভ থাকে এবং খুব অল্প পাওয়ারে কম্পিউটার অন থাকে র্যামকে সক্রিয় রাখার জন্য। হাইবারনেট মোডে আপনার কম্পিউটারের মেমোরীর কাজগুলো হার্ডড্রাইভে সংরক্ষিত থাকে এবং পুরোপুরিভাবে কম্পিউটার বন্ধ হয়ে যায়।
উইন্ডোজ এক্সপিতে হাইবারনেশন চালুঃ
উইন্ডোজ এক্সপি মাইক্রোসফ্টের অন্যতম সফল অপারেটিং সিস্টেম। উইন্ডোজ এক্সপিতে হাইবারনেট মোড চালু করতে হলে আপনাকে প্রথমে স্টার্ট মেন্যুতে ক্লিক করে কন্ট্রোল প্যানেলে যেতে হবে। কন্ট্রোল প্যানেলে যেয়ে “পাওয়ার অপশন” সিলেক্ট করুন।
পাওয়ার অপশনে ঢোকার পর পাওয়ার অপশন প্রোপার্টিজ মেন্যুর একেবারে ডানদিকে ট্যাব “Hibernate” এ ক্লিক করে “Enable hibernation” বক্সে ক্লিক করে অ্যাপ্লাই বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর শাট-ডাউন করার সময় যখন শাট-ডাউন মেন্যু পপ-আপ হবে তখন শিফ্ট চেপে ধরলে দেখবেন স্ট্যান্ডবাই অপশনের জায়গায় হাইবারনেট এসে গেছে।
শিফ্ট চেপে ধরে হাইবারনেট বাটনে ক্লিক করলে আপনার কম্পিউটার হাইবারনেট হয়ে যাবে, আর শিফ্ট না চেপে স্ট্যান্ডবাই-তে ক্লিক করলে আপনার পিসি স্ট্যান্ডবাই(স্লিপ) মোডে চলে যাবে।
Back to OS selection
Back to OS selection
উইন্ডোজ ভিসতায় হাইবারনেশন চালুঃ
উইন্ডোজ ভিসতায় হাইবারনেট চালু করতে হলে স্টার্ট মেন্যু থেকে কন্ট্রোল প্যানেল যেয়ে পাওয়ার অপশন, বা স্টার্ট মেন্যুর সার্চ বারে power option লিখলে পাওয়ার অপশন দেখাবে, ক্লিক করুন।
এছাড়াও সার্চবারে powercfg.cpl বা রান কমান্ডে powercfg.cpl লিখে এন্টার দিলে পাওয়ার অপশন একবারেই এসে পড়বে। পাওয়ার অপশনে যেয়ে “Change plan settings” এ ক্লিক করুন।
উপরের নীল লেখা “Change settings that are currently unavailable”-এ ক্লিক করুন। তারপর নিচের মেন্যু থেকে স্লিপকে আনফোল্ড করুন। “Allow hybrid sleep” অফ করে অ্যাপ্লাই বাটনে ক্লিক করুন।
এবার শাট-ডাউনের সময় মেন্যু এক্সপ্যান্ড করলে দেখবেন হাইবারনেট অপশন এসে গেছে।
উইন্ডোজ ৭-এ হাইবারনেশন চালুঃ
উইন্ডোজ সেভেনে হাইবারনেট চালু করতে হলে স্টার্ট মেন্যু থেকে কন্ট্রোল প্যানেল যেয়ে পাওয়ার অপশন, বা স্টার্ট মেন্যুর সার্চ বারে power option লিখলে পাওয়ার অপশন দেখাবে, ক্লিক করুন।
সার্চবারে powercfg.cpl বা রান কমান্ডে powercfg.cpl লিখে এন্টার দিলে পাওয়ার অপশন একবারেই এসে পড়বে। পাওয়ার অপশনে যেয়ে “Change plan settings” এ ক্লিক করুন অথবা বাম পাশ থেকে সবার নিচে “Change when the computer sleeps”-এ ক্লিক করুন।
পাওয়ার প্ল্যান সেটিংস আসবে। নিচে “Change advanced power settings”-এ ক্লিক করুন
উপরের নীল লেখা “Change settings that are currently unavailable”-এ ক্লিক করুন। অপশনগুলো থেকে স্লিপ অপশনটা আনফোল্ড করুন। সেখান থেকে “Allow hybrid sleep” অপশনে ক্লিক করে অফ করে দিন। তারপর অ্যাপ্লাই বাটনে ক্লিক করুন।
এখন আপনি শাট-ডাউন মেন্যু এক্সপ্যান্ড করলে হাইবারনেট অপশন দেখতে পারবেন।
উইন্ডোজ ৮-এ হাইবারনেশন চালুঃ
মাইক্রোসফ্ট অপারেটিং সিস্টেমের লেটেস্ট অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে উইন্ডোজ ৮। উইন্ডোজে এইটে হাইবারনেট মোড অপশন চালু করতে হলে কন্ট্রোল প্যানেলে যেয়ে পাওয়ার অপশন, বা বামদিকে নিচের কোণায় মাউস পয়েন্টার নিয়ে রাইট ক্লিক করে পাওয়ার অপশন, বা রান কমান্ডে powercfg.cpl লিখে এন্টার নয়তো চার্ম-বারের সার্চ অপশনে powercfg.cpl লেখে যে প্রোগ্রাম আসবে তাতে ক্লিক করুন। সবগুলাই এক পাওয়ার অপশন মেন্যুতেই যাবে, কিন্তু যাওয়ার পথ কতগুলা !!
পাওয়ার অপশনে যেয়ে বাম দিক থেকে “Choose what the power buttons do” অপশনে ক্লিক করুন।
ক্লিক করার পর উপরের নীল লেখা “Change the settings that are currently unavailable”-এ ক্লিক করুন।
এখন দেখবেন নিচের ঝাপসা অংশটুকু স্বাভাবিক হয়ে গেছে। স্ক্রল ডাউন করে নিচের হাইবারনেট বক্সে ক্লিক করে সেভ চেঞ্জেস বাটনে ক্লিক করুন।
এখন আপনি পাওয়ার মেন্যুতে ক্লিক করলে আপনি হাইবারনেট অপশন দেখতে পারবেন।
শর্টকাট ট্রিকঃ
এত ঝামেলা না করে কমান্ড প্রম্পটের মাধ্যমেও আপনি হাইবারনেট অফ/অন করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে কমান্ড প্রম্পট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাইট নিয়ে ওপেন করতে হবে। Start > Accessories > Command prompt-এ রাইট ক্লিক করে Run as administrator এ ক্লিক করুন বা শিফট চেপে এন্টার দিন; অথবা স্টার্ট মেন্যুর সার্চবার (ভিসতা, ৭) বা চার্মবারের (৮) সার্চে cmd লিখে প্রোগ্রাম অপশনে Shift+Enter বা রাইট ক্লিক করে Run as administrator এ ক্লিক করুন।
এরপর powercfg -h on বা powercfg /h on বা powercfg.exe /hibernate on যেকোনোটা লিখে এন্টার দিলে হাইবারনেট অপশন চালু হয়ে যাবে। বন্ধ করতে একই ভাবে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাইট নিয়ে কমান্ড প্রম্পট ওপেন করে powercfg -h off বা powercfg /h off বা powercfg.exe /hibernate off লিখে এন্টার দিলে বন্ধ হয়ে যাবে।
আগের অপারেটিং সিস্টেমগুলো তে হাইবারনেট অনেকক্ষেত্রে ধীরগতির হতে পারে, তবে সেভেন এবং এইটে তা শাট-ডাউনের বিকল্প বলা যেতে পারে।
BIOS Troublshoot:
অনেক সময় উপরের কাজগুলো করার পর হাইবারনেট অপশন না আসতে পারে, পুরোনো মাদারবোর্ডে এরকমটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। সেক্ষেত্রে পিসিতে অপারেটিং সিস্টেম বুট হওয়ার আগে F2 / Del / Space (একেক মাদারবোর্ডে একেকটা হয়ে থাকে) চেপে BIOS সেটিংসে ঢুকতে হবে। সেখানে পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট-এর ACPI মোড “S4″ এ সিলেক্ট করে সেভ করে বুট করেন।
ACPI এর অপশনগুলোর কাজ গুলো নিম্নরূপ -
S0(Working) = হার্ডড্রাইভ সম্পুর্ণরূপে পাওয়ার(বিদ্যুৎ) নিয়ন্ত্রণ করে, পুরো পাওয়ার একটা ডিভাইসের ভিত্তিতে ব্যবহার হয়।
S1(Sleep) = হার্ডড্রাইভ থামা, র্যাম সক্রিয়, অপেক্ষাকৃত কম শক্তি ব্যবহৃত হয়।
S2(Sleep 2) = হার্ডড্রাইভে পাওয়ার থাকে না, র্যাম সক্রিয়, S1 থেকে কম শক্তি ব্যবহৃত হয়।
S3(Standby) = হার্ডড্রাইভে কোনো পাওয়ার থাকে না, র্যাম অনেক অল্প শক্তিতে সক্রিয় থাকে, এই মোডকে “Save to RAM” ও বলা হয়।
S4(Hibernate) = মেমোরী বা র্যামের কাজ গুলো টেম্পোরারী ফাইলের মতো হার্ডড্রাইভে সংরক্ষিত থাকে, এই মোডকে “Save to disk” ও বলা হয়।
S5(Off) = সবকিছুই নিষ্ক্রিয়। পুরোপুরিভাবে সবকিছু রিবুট হবে।
অনেক সময় উপরের কাজগুলো করার পর হাইবারনেট অপশন না আসতে পারে, পুরোনো মাদারবোর্ডে এরকমটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। সেক্ষেত্রে পিসিতে অপারেটিং সিস্টেম বুট হওয়ার আগে F2 / Del / Space (একেক মাদারবোর্ডে একেকটা হয়ে থাকে) চেপে BIOS সেটিংসে ঢুকতে হবে। সেখানে পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট-এর ACPI মোড “S4″ এ সিলেক্ট করে সেভ করে বুট করেন।
ACPI এর অপশনগুলোর কাজ গুলো নিম্নরূপ -
S0(Working) = হার্ডড্রাইভ সম্পুর্ণরূপে পাওয়ার(বিদ্যুৎ) নিয়ন্ত্রণ করে, পুরো পাওয়ার একটা ডিভাইসের ভিত্তিতে ব্যবহার হয়।
S1(Sleep) = হার্ডড্রাইভ থামা, র্যাম সক্রিয়, অপেক্ষাকৃত কম শক্তি ব্যবহৃত হয়।
S2(Sleep 2) = হার্ডড্রাইভে পাওয়ার থাকে না, র্যাম সক্রিয়, S1 থেকে কম শক্তি ব্যবহৃত হয়।
S3(Standby) = হার্ডড্রাইভে কোনো পাওয়ার থাকে না, র্যাম অনেক অল্প শক্তিতে সক্রিয় থাকে, এই মোডকে “Save to RAM” ও বলা হয়।
S4(Hibernate) = মেমোরী বা র্যামের কাজ গুলো টেম্পোরারী ফাইলের মতো হার্ডড্রাইভে সংরক্ষিত থাকে, এই মোডকে “Save to disk” ও বলা হয়।
S5(Off) = সবকিছুই নিষ্ক্রিয়। পুরোপুরিভাবে সবকিছু রিবুট হবে।
এগুলোর মধ্যে S3 সবচেয়ে ভালো বলা চলে, সবচেয়ে কম শক্তি ব্যবহার করে এবং দ্রুত রিবুট হয়।